ইসলামী শরিয়ত বনাম সাধারণ আইন

ইসলামী শরিয়ত বনাম সাধারণ আইন

ইসলামী শরিয়ত বনাম সাধারণ আইন

ভক্তি শ্রদ্ধা ও পবিত্রতা

$Blasher.jpg*

বারিশা বানকমরোট

থাই শিক্ষাবিদ, বৌদ্ধ ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন
সম্মান ও মর্যাদার ধর্ম
ইসলাম শান্তি, সাম্য, স্বাধীনতা, ভ্রাতৃত্ব, মাহাত্ব ও মর্যাদার ধর্ম। এর বিধি বিধান রীতি নীতি আদব কায়দার মাঝে তা ফুটে ওঠে। যেমন ইসলামের রোজা অন্যান্য ধর্মের রোজার মত নয়। কারণ, মানুষের দেহের চাহিদাকে এমন ভাবে দমন করা যে, দেহ কংকালসার হয়ে যাবে, যেমন ধর্ম যাজকরা করে থাকে এটা মানুষের মূল উদ্দেশ্য নয়। তাই ইসলাম দেহের চাহিদাকে পরিপাটি করেছে, সমূলে দমন করেনি । তাই ইসলামে রোজা হল, হারাম পাপাচারবৃত্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও ধৈর্যের উপর নফসকে অভ্যস্ত করে তোলা। গোপনে ও প্রকাশ্যে আল্লাহর মুরাকাবা করা। বঞ্চনা ও ক্ষুধার অনুভব জাগিয়ে তোলা যাতে রোজাদার বঞ্চিতদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়। অনুরূপ ভাবে রোজাতে আছে অতিভোজন থেকে দেহের বিশ্রাম লাভের সুযোগ। সুতরাং, রোজা মানুষের দেহ, আত্মা ও বুদ্ধির ক্ষেত্রে উপকারী এবং তা সমাজের জন্য পারস্পরিক নৈকট্য , সহযোগিতা ও ঐক্যের ক্ষেত্রে উপকারী।

ইসলামী শরিয়ত মানুষের শ্রদ্ধা, পবিত্রতা ও সম্মান অর্জন করে থাকে। কেননা ইহার দ্বীনি গুনাবলী কারণে মানুষের মনে লেগে থাকে। ইহার প্রণেতা হলেন মহান আল্লাহ তায়া’লা , যার পবিত্রতা, বড়ত্ব, তাঁর সামনে নতজানুতা সব মানুষের অন্তরে বিরাজ করে।

সুবিন্যাস ও স্থায়ীত্বতা

ইসলামী শরিয়ত মানুষের স্বভাব-প্রকৃতি, পরিবেশ, জাতীয়তা ও ভাষার ভিন্নতা সত্বেও সব জাতির জন্য উপযোগী। কেননা ইহার প্রণেতা হলেন মহান আল্লাহ তায়া’লা, যিনি মানুষ, তার স্বভাব-প্রকৃতি, চাহিদা, আরো যা কিছু তাদের সাথে সম্পৃক্ত তিনি সব কিছুই জানেন।অন্যদিকে তিনি খামখেয়ালী ও লোভলালসা হতে মুক্ত। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ তুমি একনিষ্ঠ ভাবে নিজেকে ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ। এটাই আল্লাহর প্রকৃতি, যার উপর তিনি মানব সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। এটাই সরল ধর্ম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না। (সূরা রূমঃ ৩০)

পক্ষান্তরে মানব রচিত আইনসমূহ মানব রচনা করে। তারা জ্ঞান বিজ্ঞানে যতই উর্ধে উঠুক না কেন তাদের জ্ঞান অসম্পুর্ণ থেকে যায়। তারা গতকাল ও আজকের বিষয়গুলো জানলেও আগামী কালের বিষয়গুলো জানেনা। মানুষের কিছু স্বভাব চরিত্র জানলেও পুরোপুরি কিছুই জানেনা। এজন্যই এ সব আইন কানুন সব স্বভাবের সাথে উপযোগী হয়না, সব সমাজে ও অবস্থায় কার্যকরী হয়না। ইহা কোন কোন জাতির কাজে আসলেও অন্যান্যদের কাজে আসেনা।

সঠিকতা, সত্য ও ন্যায়বিচার

ইসলামী শরিয়ত সঠিকতা, সত্যতা ও ন্যায়পরায়ণতার অনুসারী। কেননা এতে কোন ধরণের ভুল, গলদ, অন্যায়, জুলুম, প্রবৃত্তি ও খাম খেয়ালীর অনুসরণের কোন সম্ভাবনাই নাই। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ আপনার প্রতিপালকের বাক্য পূর্ণ সত্য ও সুষম। তাঁর বাক্যের কোন পরিবর্তনকারী নেই। তিনিই শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। (সূরা আন’আমঃ ১১৫)

একমাত্র আল্লাহ তায়া’লাই সমস্ত প্রয়োজন থেকে মুক্ত। তিনি সব সুক্ষ্ম বিষয়ের প্রকাশ্য ও গোপনীয় সব কিছুই জানেন। বান্দাহর সর্ব বিষয়ে অবগত। তাদের যাতে উপকার ও স্বার্থ রয়েছে তিনি তাই আদেশ করেন, আর যেসব কিছুতে তাদের ক্ষতি রয়েছে তিনি তা থেকে নিষেধ করেন। অন্যদিকে মানব রচিত আইন কানুনে ভুল, গলদ ও খামখেয়ালীর অনুসরণ রয়েছে। এজন্যই ইহা ভুল ত্রুটি, বাতিল, পরিবর্তন, রূপান্তর থেকে মুক্ত নয়। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ পক্ষান্তরে এটা যদি আল্লাহ ব্যতীত অপর কারও পক্ষ থেকে হত, তবে এতো অবশ্যই বহু বৈপরিত্য দেখতে পেত। (সূরা নিসাঃ ৮২)

মানববিকতা

$Blasher.jpg*

বারিশা বানকমরোট

থাই শিক্ষাবিদ, বৌদ্ধ ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন
পরিচ্ছন্ন ও সুখী সমাজ
যে মুসলিম সমাজ ইসলামের হুকুম-আহকাম ও শিক্ষা-দীক্ষা মেনে চলে তা একটি পরিচ্ছন্ন ও সুখী সমাজ। সেখানে কোন ধরণের অপরাধ থাকবে না।

ইসলামী শরিয়ত মানুষের চিন্তা ভাবনা থেকে উৎসারিত কোন আইন কানুন নয়, বরং ইহার প্রণেতা হলেন মহান আলাহ পাক রাব্বুল আলামিন, মানুষের স্বভাব ও সৃষ্টিগত চাহিদায় যা কিছু উপযোগী তিনি সে সব কিছুই তিনি অন্তর্ভূক্ত করেছেন। যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তিনিই মানুষের প্রয়োজন সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি করে জানবেন না? তিনি সূক্ষ্মজ্ঞানী, সম্যক জ্ঞাত। (সূরা মুলকঃ ১৪)

তাদের বোঝা হালকা করার ব্যাপারে তিনিই অধিক জ্ঞাত। আল্লাহ তোমাদের বোঝা হালকা করতে চান। মানুষ দুর্বল সৃজিত হয়েছে। (সূরা নিসাঃ ২৮)

পক্ষান্তরে, মানব রচিত আইনে আইন প্রণেতা শুধুমাত্র তার ইচ্ছা, গুরুত্ব, মেজাজ ও পরিবেশ অনুযায়ী প্রণয়ন করে থাকেন।

আত্মিকতা

ইসলামী শরিয়ত মানুষের প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সব ধরণের কাজের গুরুত্ব ও বিবেচনা করে থাকে। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ আর একথা জেনে রেখো যে, তোমাদের মনে যে কথা রয়েছে, আল্লাহর তা জানা আছে। কাজেই তাঁকে ভয় করতে থাক। আর জেনে রেখো যে, আল্লাহ ক্ষমাকারী ও ধৈর্য্যশীল। (সূরা বাকারাঃ ২৩৫)

পক্ষান্তরে, মানব রচিত আইনে শুধু বাহ্যিক দিকই গুরুত্ব ও বিবেচনা করে থাকে। এতে আত্মিক বা পরকালীন কোন বিষয় ভাবা হয়না। আর মানব রচিত আইনে শুধুমাত্র পার্থিব শাস্তির বিধান রয়েছে।




Tags: