যখন একথা সুস্থ স্বভাব ও বিবেকে স্থিতিশীল হলো যে, এ মহাবিশ্বের একজন প্রতিপালক আছেন, এসব সৃষ্টজীবের একজন স্রষ্টা আছেন, তাহলে আল্লাহর প্রতিপালনের ব্যাপারে সবাই একমত হলো, তাঁর একচ্ছত্র প্রতিপালকত্বে সবাই মাথানত করল। এ প্রতিপালকত্ব ঘোষনা করে যে, তিনিই একমাত্র ইবাদত পাওয়ার যোগ্য, তাঁর কোন শরিক নেই। এ ব্যাপারে অনেক দলিল প্রমাণ রয়েছে। তন্মধ্যে কিছু হলোঃ
মানুষের বিবেক সর্বদা একথা স্বীকার করতে বাধ্য যে, এ বিশ্বে একজনই মাত্র ইলাহ আছেন। নতুবা যদি দুজন বা একাধিক ইলাহ থাকত – তর্কের খাতিরে ধরে নেয়া হলে- তাহলে প্রশ্ন দেখা দিতঃ যখন দুজনের মতে বিরোধ দেখা দিবে, বা দুজনই তাঁর নিজের ইচ্ছা পূরন করতে চাইবে তখন কি হবে? একজন একটি আদেশ দিবে আর অন্যজন এর বিপরীত আদেশ দিবে?! তখন একজনকেঅন্যজনের উপর জয়ী হতে হবে। আর একজন জয়ী হলে অন্যজন স্বাভাবিকভাবেই অক্ষম হবেন। আর একজন অক্ষম ব্যক্তি কি ইলাহ হতে পারেন? তাহলে একথা প্রমাণিত হলো যে, এ মহাবিশ্বে একজনই ইলাহ আছেন। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ Avjvn †Kvb mš—vb MÖnY K‡ibwb, Zuvi mv‡_ Ab¨ †Kvb BjvnI †bB| (hw` _vKZ) Z‡e cÖ‡Z¨K Bjvn wb‡Ri m„wó‡K wb‡q c„_K n‡q †hZ Ges G‡K A‡b¨i Dci cÖvavb¨ we¯—vi KiZ; Zviv hv eY©bv K‡i Zv †_‡K Avjvn KZ cweÎ! (মু’মিনুনঃ ৯১-৯২)
এটা অবশ্যই আশ্চর্যজনক যে, মানুষ অক্ষম ও শক্তিহীন কোন কিছুর ইবাদত করবেযে আসমান জমিনের মালিক নয় এবং কিছুই সৃষ্টি করেননি, আর যে নিজের ভাল মন্দেরই মালিক নয়- অন্যদের ভাল মন্দের কথা বাদই দিলাম- জীবন মৃত্যুর ও পুনরুত্থানেরও সে মালিক নয়। আল্লাহ পাক বলেনঃ
পরম কল্যাণময় তিনি যিনি তাঁর বান্দার প্রতি ফয়সালার গ্রন্থ অবর্তীণ করেছেন, যাতে সে বিশ্বজগতের জন্যে সতর্ককারী হয়, তিনি হলেন যাঁর রয়েছে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব। তিনি কোন সন্তান গ্রহণ করেননি। রাজত্বে তাঁর কোন অংশীদার নেই। তিনি প্রত্যেক বস্তু সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তাকে শোধিত করেছেন পরিমিতভাবে। তারা তাঁর পরিবর্তে কত উপাস্য গ্রহণ করেছে, যারা কিছুই সৃষ্টি করে না এবং তারা নিজেরাই সৃষ্ট এবং নিজেদের ভালও করতে পারে না, মন্দও করতে পারে না এবং জীবন, মরণ ও পুনরুজ্জীবনের ও তারা মালিক নয়। (ফুরকানঃ ১-৩)
তা নাহলে মুশরিকরা যেভাবে বলে যে, আল্লাহর সাথে কতিপয় ইলাহ আছেন যাদের ইবাদত করা হয় আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে ও তারা আল্লাহর নিকট শাফায়াত করবেন। তাহলে সেসব ইলাহগণও আল্লাহর ইবাদত করে, তাঁর নৈকট্য লাভের প্রত্যাশা করে, তাঁর নিকট ওসিলা কামনা করে। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ
বলুনঃ তাদের কথামত যদি তাঁর সাথে অন্যান্য উপাস্য থাকত; তবে তারা আরশের মালিক পর্যন্ত পৌছার পথ অন্বেষন করত। তিনি নেহায়েত পবিত্র ও মহিমান্বিত এবং তারা যা বলে থাকে তা থেকে বহু উর্ধ্বে। ( বনী ইসরাঈলঃ ৪২-৪৩)
বরং তিনি এক ও একক আল্লাহ, তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন, কাউকে জন্ম দেননি, আর কারো থেকে জন্ম লাভও করেননি, তাঁর কোন সমকক্ষ নেই।
আর এ সব মা’বুদ্গণ কোন কিছুরই মালিক নয়, তারা কিছুই করতে সক্ষম নয়। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ
বলুন, তোমরা তাদেরকে আহবান কর, যাদেরকে উপাস্য মনে করতে আল্লাহ ব্যতীত। তারা নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের অনু পরিমাণ কোন কিছুর মালিক নয়, এতে তাদের কোন অংশও নেই এবং তাদের কেউ আল্লাহর সহায়কও নয়। যার জন্যে অনুমতি দেয়া হয়, তার জন্যে ব্যতীত আল্লাহর কাছে কারও সুপারিশ ফলপ্রসূ হবে না। (সাবাঃ ২২-২৩)
অর্থাৎ হে রাসুল! যারা আল্লাহর সাথে উপকার বা ক্ষতি সাধনে অক্ষম অন্য সব সৃষ্টজীবকে শরীক করে, তাদেরকে সেসব শরীকের অক্ষমতা ও সেসবের ইবাদাতের ভ্রান্তি প্রকাশ করে বলুনঃ তোমরা যাদেরকে আল্লাহ্র শরীক মনে কর তাদেরকে ডাক, যদি মনে কর তাদেরকে ডেকে কোন লাভ হবে। কেননা তাদের মধ্যে অক্ষমতা ও ডাকে সাড়া না দেয়ার সব ধরনের উপাদান বিদ্যমান।কারণ, তাদের সামান্যতম ক্ষমতাও নেই, তাই তারা আসমান ও জমিনের অণু পরিমান জায়গারও স্বতন্ত্র বা অংশীদারি কোনভাবেই মালিক না। তোমাদের তথাকথিত শরীকদের আসমান ও যমীনে সামান্যতম মালিকানা বা অংশীদারীত্বও নেই। এখন বাকি রইল যারা বলেঃ আমরা তাদের উপাসনা করি কেননা তারা প্রভুর সাহায্যকারী, সহযোগী উজির নাযির ইত্যাদি, তাই তাদের দোয়া কাজে আসে। কেননা – মালিকের তাদের দরকার পড়ে- প্রত্যেকে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে। আল্লাহ তায়া’লা তাদের এ সব ভ্রান্ত ধারণা নস্যাৎ করে বলেনঃ তার নেই অর্থাৎ পরাক্রমশালী এক আল্লাহ তায়া’লার নেই তাদের থেকে অর্থাৎ সে সব উপাস্যদের থেকে সাহায্যকারী অর্থাৎ তার মালিকানায় ও পরিচালনায় কোন সাহায্যকারী।
এ মহাবিশ্ব ও এর সুবিন্যাস্ত সুন্দর বহমানতা ও পরিচালনার দিকে তাকালে সর্বশক্তিমান পরাক্রমশালী এক আল্লাহর প্রমাণ পাওয়া যায়। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ
আর তোমাদের উপাস্য একইমাত্র উপাস্য। তিনি ছাড়া মহা করুণাময় দয়ালু কেউ নেই। নিশ্চয়ই আসমান ও যমীনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের বিবর্তনে এবং নদীতে নৌকাসমূহের চলাচলে মানুষের জন্য কল্যাণ রয়েছে। আর আল্লাহ তা’ আলা আকাশ থেকে যে পানি নাযিল করেছেন, তদ্দ্বারা মৃত যমীনকে সজীব করে তুলেছেন এবং তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সবরকম জীব-জন্তু। আর আবহাওয়া পরিবর্তনে এবং মেঘমালার যা তাঁরই হুকুমের অধীনে আসমান ও যমীনের মাঝে বিচরণ করে, নিশ্চয়ই সে সমস্ত বিষয়ের মাঝে নিদর্শন রয়েছে বুদ্ধিমান সম্প্রদায়ের জন্যে। (বাকারাঃ ১৬৩-১৬৪)
এ সুবিন্যাস্ত ও নিয়মতান্ত্রিক পরিচালনা যা সারা জীবন ধরে চলে আসছে, যাতে কোন ত্রুটি দেখা দেয়নি, এক মুহুর্তের জন্যও থেমে যায়নি, যদি থেমে যেত তবে এ মহাবিশ্ব নিমিষে ধবংস হয়ে যেত। এ সব কিছু একমাত্র মহাশক্তিমান আল্লাহ ছাড়া কারোর পক্ষে সম্ভব নয়। এ চমৎকার সৃষ্টিকারী ও পরিচালনাকারী কি একজন নয়? যা কোন শরীক নেই। এসব কিছুতে জ্ঞানীদের কাছে কি এটা স্পষ্ট ও স্থায়ীভাবে প্রমাণিত হয়না যে, দু’জন বা একাধিক ইলাহ থাকা অসম্ভব?!
আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ যদি নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলে আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য উপাস্য থাকত, তবে উভয়ের ধ্বংস হয়ে যেত। অতএব তারা যা বলে, তা থেকে আরশের অধিপতি আল্লাহ পবিত্র। (আম্বিয়াঃ ২২)
অর্থাৎ আসমান ও জমিনে আল্লাহ ব্যতীত যদি একাধিক ইলাহ থাকত তাহলে উহা ধবংস হয়ে যেত। ধবংস হয়ে যেত এর মধ্যকার সব সৃষ্টি। কেননা বিশ্বভ্রহ্মান্ড –আমরা যা দেখি- সর্বোচ্চ সুনিয়ন্ত্রিত ও চমৎকারভাব সুবিন্যাস্ত। এতে সামান্যতমও ত্রুটি নেই। কোন আপত্তি ও বৈপরিত্য নেই। এতে প্রমাণ করে যে, এর পরিচালক একজন। প্রতিপালক একজন, উপাস্য একজন। যদি এর দুজন বা ততোধিক পরিচালক বা প্রতিপালক থাকত তাহলে পরিচালনায় ত্রুটি দেখা দিত। এর মূলভিত্তিগুলো ধবংস হয়ে যেত। কেননা তখন একে অন্যের সাথে বিরোধ দেখা দিত। এক ইলাহ চাইত এক ধরনের আর অন্যজন চাইত অন্য ধরনের। আর দুজনেরই ইচ্ছা পূরণ করাও অসম্ভব। আবার শুধু একজনের ইচ্ছা পূরণ হওয়া অন্যজনের অক্ষমতা ও দুর্বলতার প্রমাণ। আবার সব বিষয়ে দুজনের এক হওয়াও অসম্ভব। অতএব এটাই অবধারিত যে, একমাত্র যে মহা ক্ষমতাবানের ইচ্ছায় সব কিছু সৃষ্টি হয় , যার কোন শরীক নেই তিনিই হলেন একমাত্র সর্সক্তিমান আল্লাহ।
হযরত আদম (আলাইহিস সালাম) থেকে শুরু করে, নূহ, ইব্রাহিম, মুসা, ঈসা ও মুহাম্মদ (আলাইহিমুস সালাম) সহ সব নবী রাসুলগণ – তারা হলেন পুতঃপবিত্র আত্মা, দূরদর্শী জ্ঞানী, সত্যবাদি, সঠিকভাবে আমানতের সাথে দাওয়াত দানকারী, পরিপক্ক ও পরিশোধিত ব্যক্তিবর্গ- তারা সকলে আল্লাহর একত্ববাদ এবং আল্লাহ ছাড়া যে কোন ইলাহ নেই এ ব্যাপারে একমত । আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ
আপনার পূর্বে আমি যে রাসূলই প্রেরণ করেছি, তাকে এ আদেশই প্রেরণ করেছি যে, আমি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই। সুতরাং আমারই এবাদত কর। (আম্বিয়াঃ ২৫)
আল্লাহ তায়া’লা নূহ (আঃ) সম্পর্কে বলেনঃ
নিশ্চয় আমি নূহকে তার সম্প্রদায়ের প্রতি পাঠিয়েছি। সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা আল্লাহর এবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন উপাস্য নেই। আমি তোমাদের জন্যে একটি মহাদিবসের শাস্তির আশঙ্কা করি। (আ’রাফঃ ৫৯)
আল্লাহ তায়া’লা ঈসা (আঃ) সম্পর্কে বলেনঃ
তারা কাফের, যারা বলে যে, মরিময়-তনয় মসীহ-ই আল্লাহ; অথচ মসীহ বলেন, হে বণী-ইসরাঈল, তোমরা আল্লাহর এবাদত কর, যিনি আমার পালন কর্তা এবং তোমাদেরও পালনকর্তা। নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থির করে, আল্লাহ তার জন্যে জান্নাত হারাম করে দেন। এবং তার বাসস্থান হয় জাহান্নাম। অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই। (মায়েদাঃ ৭২)
তিনি মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম) কে তাঁর জাতিকে বলার নির্দেশ দিয়েছেনঃ বলুনঃ আমাকে তো এ আদেশই দেয়া হয়েছে যে, তোমাদের উপাস্য একমাত্র উপাস্য। সুতরাংতোমরা কি আজ্ঞাবহ হবে? (আম্বিয়াঃ ১০৮)
অতএব জ্ঞানীদের কর্তব্য হলো আম্বিয়া কিরামদেরকে অনুসরণ করা, আল্লাহর একত্ববাদ স্বীকার করা এবং প্রতিপালক ও ইলাহ হিসেবে তাঁর উপর ঈমান আনা;যাতে তারা দুনিয়া ও আখেতারে সফলতা ও শান্তি লাভ করতে পারে। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ যে সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং সে ঈমাণদার, পুরুষ হোক কিংবা নারী আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের উত্তম কাজের কারণে প্রাপ্য পুরষ্কার দেব যা তারা করত। (নাহলঃ ৯৭)
ঈমানের সাথে সৎ কাজের প্রতিদান হলো এ পৃথিবীতে উত্তম জীবন লাভ। উত্তম জীবনের অর্থ এ নয় যে খুব সম্পদশালী হবেন, কখনো কখনো সম্পদশালী হতে পারেন, আবার নাও হতে পারেন। কেউ অঢেল ধন সম্পদ ছাড়াও উত্তম জীবন পেতে পারে। কেননা জীবনকে উত্তম করতে ধন সম্পদ ছাড়াও অনেক কিছু আছে। তন্মধ্যেঃ আল্লাহর সাথে সম্পর্ক, তাঁর উপর আত্মবিশ্বাস ও ভরসা করা, তাঁর পর্যবেক্ষণ, হেফাযত ও সন্তুষ্টিতে নিজেকে নিরাপদ ও শান্ত মনে করা। এমনিভাবে উত্তম জীবনের অন্তর্ভুক্ত হলো সুস্বাস্থ, শান্তি, পরিতুষ্টি, গৃহে প্রশান্তি, অন্তরের ভালবাসা। এতে আরো রয়েছে, সৎ কাজের দ্বারা তৃপ্তি লাভ করা এবং ব্যক্তির অন্তরে ও জীবনে এর প্রভাব। ধন সম্পদ জীবন সৌন্দর্যের একটি উপাদান মাত্র। ধনৈশ্বর্য ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য এবং স্থায়ী সৎকর্মসমূহ আপনার পালনকর্তার কাছে প্রতিদান প্রাপ্তি ও আশা লাভের জন্যে উত্তম। (কাহাফঃ ৪৬)
অন্তর যখন আল্লাহ্র নিকট যা অধিক মহান, পুতঃপবিত্র ও স্থায়ী তার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করবে তখন উত্তম জীবনের ও শান্তির অন্য অর্থ দেখতে পাবে।
আর যদি মানুষ তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে সে একাধারে দুর্দশা ও দুর্বিপাক নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে বাধ্য থাকে। কখনো তার দুশ্চিন্তা, পেরেশানী এমন পর্যায় পৌঁছে যায় যে, তখন মনের সব আশা শেষ হয়ে যায় ও জীবনে বেঁচে থাকার অর্থ হারিয়ে ফেলে। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
অতঃপর আল্লাহ যাকে পথ-প্রদর্শন করতে চান, তার বক্ষকে ইসলামের জন্যে উম্মুক্ত করে দেন এবং যাকে বিপথগামী করতে চান, তার বক্ষকে সংকীর্ণ অত্যধিক সংকীর্ণ করে দেন-যেন সে সবেগে আকাশে আরোহণ করছে। (আন’আমঃ ১২৫)
যে আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসী, যার কোন শরিক নেই, তার অন্তরকে আল্লাহ তায়া’লা প্রশস্ততা, আরাম ও প্রশান্তির দ্বারা ভরে দেন। আর আল্লাহ যাকে গোমরাহ করেন তার অন্তরকে সংকীর্ণ, অস্থির, উদ্বিগ্ন ও জটিল করে দেন, - আল্লাহ আমাদেরকে এ সব থেকে হেফাযত করুন-। এ উদাহরণ যারা এক আল্লাহ তায়া’লায় ঈমান আনে, আর যারা তার সাথে শরিক করে তাদের জন্য। আল্লাহ পাক আরেকটি উদাহরণ দিয়ে বলেছেনঃ
আল্লাহ এক দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেনঃ একটি লোকের উপর পরস্পর বিরোধী কয়জন মালিক রয়েছে, আরেক ব্যক্তির প্রভু মাত্র একজন-তাদের উভয়ের অবস্থা কি সমান? সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না। (যুমারঃ ২৯)
মুশরিক হলো উক্ত ব্যক্তির ন্যায় যার হিংস্র চরিত্রের ও কঠোর স্বভাবের একাধিক মালিক রয়েছে, তারা তাকে নিয়ে পরস্পর বিরোধ করে। একজন বলেঃ এদিকে এসো, অন্যজন বলে, বসে থাক, তৃতীয়জন বলে, দাঁড়িয়ে থাক। সে তাদের আদেশে হয়রান, দিশেহারা। তার দৈহিক ও আত্মিক কোন ধরনেরই শান্তি নাই। অন্যদিকে আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসী হলো একজন নিরাপদ ব্যক্তি যাকে এক মালিকই আদেশ ও নিষেধ দেয়, ফলে কোন বৈপরিত্য দেখা দেয়না। এ দুজনের অবস্থা কি সমান? অতএব সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ তায়া’লার, যত গুনকীর্তন একমাত্র তারই, তিনি মহান, তিনি এক প্রতিপালক, এক ইলাহ, তিনি ছাড়া অন্য কোন ইলাহ বা রব নেই। আর যারা একথা জানেনা বা বিশ্বাস করেনা তারা অন্তর্দন্ধ নিয়া বাস করে। এর সাথে আছে দুশ্চিন্তা দুর্দশা, বিষণ্নতা, হয়রানি মোহাবিষ্টতা ও আত্মহননের প্রবনতা ।