এ পথ প্রত্যেক বিবেকবানই চিনে যদিও প্রকাশ্যে অস্বীকার করে। সে জানে ইহাই চিরস্থায়ী শান্তির পথ। মূসা (আঃ) তার নবুয়াতের মু’যিজা পেশ করার পরেও যেমনিভাবে তারা অস্বীকার করেছিল, এদের অবস্থাও তাই। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ তারা অন্যায় ও অহংকার করে নিদর্শনাবলীকে প্রত্যাখ্যান করল, যদিও তাদের অন্তর এগুলো সত্য বলে বিশ্বাস করেছিল। অতএব দেখুন, অনর্থকারীদের পরিণাম কেমন হয়েছিল? (সূরা নামলঃ ১৪)
অনেক নিরপেক্ষ নীতিবান জ্ঞানীরা -যদিও তারা ইসলাম গ্রহণ করেনি- স্বীকার করেছেন যে, সমস্ত মানবজাতির দুনিয়া ও আখেরাতের সুখ শান্তির একমাত্র পথ ইহাই।
ইহাই একমাত্র পথ... নিজের বিবেকের মত প্রকাশে সাহসী প্রত্যেক ব্যাক্তিই কথ স্বীকার করেন, যদিও অনেক সংকীর্ণতা ও গোপনীয়তা থাকে। যারা নিজের স্বার্থকে বা মানুষেকে ভয় পায়না। তারা ভয় পায়না এ দ্বীন গ্রহণে কোন নতুনত্বকে বা প্রচারনাকে বা মস্তিষ্কে অংকিত পূর্বের কোন চিত্রকে। কত মানুষকেই ভীরুতা, সম্পর্কচ্ছেদ ও সামাজিক বন্ধন ছিন্ন হওয়ার ভয় এ দ্বীন গ্রহণ ও শান্তির পথ থেকে বিরত রেখেছে। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ সুতরাং তোমরা তাদের ভয় করো না। আর তোমরা যদি ঈমানদার হয়ে থাক,তবে আমাকে ভয় কর। (সূরা আলে ইমরানঃ ১৭৫)
ইহাই একমাত্র পথ... হ্যাঁ ইহা সুখ-সৌভাগ্যের পথ, সম্মানের পথ, রহমতের পথ, জ্ঞানের পথ, সভ্যতার পথ, সচ্চরিত্রের পথ। যদিও এ পথে কিছু পরীক্ষা আসে, তা হলো জীবনের স্বাভাবিক নিয়ম, মিথ্যাবাদী থেকে সত্যবাদী যাচাই করার জন্য। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন, যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন-কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাময়। (সূরা মুলকঃ ২)
ইহাই একমাত্র পথ... এ পথেই পূর্ববর্তী সকল আম্বিয়া কিরামগণ চলেছেন, সাহাবা কিরাম ও তাদেরকে যথাযথভাবে অনুসরণকারী সমস্ত জাতি, গোত্র ও ভাষাভাষী তাবেঈনদের পথ। ইহাই অদূর ভবিষতে নেতৃত্ব দিবে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাহিস সালাম বলেছেনঃ দিবস ও রজনীর ন্যায় আল্লাহ তায়া’লা এই দ্বীনকে অবশ্যই সর্বত্র পৌঁছে দিবেন। আল্লাহ তায়া’লা এমন কোন মাটির ঘর কিংবা চামড়ার তৈরি তাঁবু ঘর রাখবেন না, যেখানে এই দ্বীনকে প্রবেশ করানো হবে না, সম্মানিত ব্যক্তিদের জন্য সম্মানের পন্থায় এবং লাঞ্ছিতের জন্য লাঞ্ছনাময় পন্থায়। সম্মানিতকে আল্লাহ পাক ইসলাম গ্রহণের মাধ্যমে সম্মানিত করেন, আর লাঞ্ছিতকে কুফুরীর মাধ্যমে লাঞ্ছিত করেন”। (মুসনাদে আহমদ)। সুতরাং এ চিরস্থায়ী শান্তির পথে সম্মানিত পথিকদের সাথে চলো। ইহাই একমাত্র পথ...... ইহাই একমাত্র সফলতা... ইহাই সুখ-সৌভাগ্য, যাতে এ পথের পথিকদের অন্তর সর্বদা ডুবে থাকে। অতএব, নিজেকে বঞ্চিত করো না, নিজের উপর জুলুম করো না। সাবধান! নিজের উপর জুলুম করা থেকে বিরত থাকো, সৌভাগ্যের পথে চলো। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ যে সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং সে ঈমাণদার, পুরুষ হোক কিংবা নারী আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের উত্তম কাজের কারণে প্রাপ্য পুরষ্কার দেব যা তারা করত। (সূরা নাহলঃ ৯৭)
ইহাই হলো পথ... অতঃএব ইহাকে শক্তকরে আঁকড়িয়ে ধর। দুনিয়াতে অনাবিল সুখ, শান্তি, নিরাপত্তা ও আরামে জীবন যাপন করো। ভুলে যেওনা আল্লাহর নিকট যা আছে তা অতিউত্তম ও স্থায়ী। আখেরাতের আরাম হলো স্থায়ী আরাম। আমাদের ইলাহ আল্লাহ তায়া’লা আমাদের জন্য একটি পথই দিয়েছেন। এতে দুনিয়ার শান্তি ও আখেরাতের শান্তি। অন্যসব পথে দুনিয়ার অশান্তি ও দুর্দশা এবং আখেরাতের আযাব রয়েছে। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ এবং যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কেয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব। সে বলবেঃ হে আমার পালনকর্তা আমাকে কেন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করলেন? আমি তো চক্ষুমান ছিলাম। (সূরা তোয়াহাঃ ১২৪-১২৫)
আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ আল্লাহ বলবেনঃ এমনিভাবে তোমার কাছে আমার আয়াতসমূহ এসেছিল, অতঃপর তুমি সেগুলো ভুলে গিয়েছিলে। তেমনিভাবে আজ তোমাকে ভুলে যাব। (সূরা তোয়াহাঃ ১২৬)
সাবধান! হে আত্মভোলা বা স্বেচ্ছায় ভুলে যাওয়া মানুষ!! ইহাই সুখ-সৌভাগ্যের পথ। এপথই আঁকড়িয়ে ধর।
ইহাই একমাত্র পথ.... এ পথ চলতে শুরু করে অন্তরে আল্লাহর একত্ববাদ, অঙ্গ প্রত্যঙ্গের দ্বারা স্বীকৃতি এবং সমস্ত নবী রাসুলদের উপর ঈমান নিয়ে, আর শেষ হয় পরকালের অনাবিল শান্তি লাভের মাধ্যমে। শুরু হয় কালেমায়ে শাহাদাতের মাধ্যমে, তা হলোঃ আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মদার রাসুলুল্লাল্লাহ, অর্থাৎ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রাসুল। ইহা শেষ হয় জান্নাতে আল্লাহ তায়া’লার দর্শন ও রাসুলের সান্নিধ্য লাভের সৌভাগ্যের মধ্য দিয়ে। অতএব এখুনি বলোঃ”আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মদার রাসুলুল্লাল্লাহ”। সুখী জীবন যাপন কর, আর সুখী হয়ে মৃত্যুবরণ কর। জান্নাতে প্রবেশের আগ পর্যন্ত কবরে সুখী হয়ে থাক। ইহাই একমাত্র পথ। তুমি যদি এ পথে না চল, তবে মনে রেখো, রাসুলের শুধু পৌঁছানোই দায়িত্ব। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ তথাপি যদি তোমরা মুখ ফেরাও, তবে আমি তোমাদেরকে তা পৌছিয়েছি যা আমার কাছে তোমাদের প্রতি প্রেরিত হয়েছে; আর আমার পালনকর্তা অন্য কোন জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন, আর তোমরা তাঁর কিছুই বিগড়াতে পারবে না; নিশ্চয়ই আমার পরওয়ারদেগারই প্রতিটি বস্তুর হেফাজতকারী। (সূরা হুদঃ ৫৭)দ্দেশ্য