ব্যক্তির জন্য যখন দ্বীন বা ধর্ম অত্যাবশ্যক তখন সমাজের জন্য দ্বীনের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশী।কেননা ধর্ম হলো সমাজ রক্ষার ঢাল স্বরূপ। যেহেতু পরস্পরের ভালকাজে সহযোগীতা ছাড়া মানবজীবন চলতে পারেনা। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। (মায়েদাঃ ২)
আর এ সহযোগীতা একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম শৃঙ্খলা ছাড়া সম্ভব নয়, যা তাদেরকে তাদের দায়িত্ব কর্তব্য, ও অধিকার ইত্যাদি নির্ধারণ করে দিবে।
এ ব্যবস্থা এমন একজনের পক্ষ থেকে আসতে হবে যিনি মানবজাতির সব ধরনের প্রয়োজন সম্পর্কে অভিজ্ঞ ও জ্ঞাত। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ যিনি সৃষ্টি করেছেন,তিনি কি জানবেন না? তিনি সূক্ষ্মজ্ঞানী, সম্যক জ্ঞাত। (মুলকঃ ১৪)
যখনই মানবজাতি দ্বীন, শরিয়ত ও ইহার ব্যবস্থাপনা থেকে পথচ্যুত হবে, তখনই সে সন্দেহ, ভ্রষ্টতা, ঘুর্ণিপাক, অস্থিরতা, দুঃখ ও দুর্দশায় পতিত হবে।
দ্বীনের শক্তির মত কোন শক্তি পৃথিবীর বুকে নেই, তদ্রুপ দ্বীনের নিয়মকানুনের মত সম্মানযোগ্য কোন কানুনও নেই। সমাজের নিরাপত্তা ও শান্তির গ্যারান্টি একমাত্র দ্বীনই দিতে পারে। দ্বীনই পারে সমাজে আরাম ও শান্তি দিতে। এর গুরু রহস্য হলো, মানুষ অন্যান্য প্রাণী থেকে আলাদা, যেহেতু তার চলাফেরা, আচার আচরণ ইত্যাদি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারে এমন জিনিস যা শ্রবণ ও দৃষ্টির বাইরে।আর তা হলো, এমন ঈমানী বিশ্বাস যা আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে, অঙ্গ প্রতঙ্গকে পবিত্র করে এবং তাকে প্রকাশ্য বিষয়গুলোর মত গোপনীয় সব বিষয়েও সচেতন করে। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ যদি তুমি উচ্চকন্ঠেও কথা বল,তিনি তো গুপ্ত ও তদপেক্ষাও গুপ্ত বিষয়বস্তু জানেন। (ত্বহাঃ ৭)
অতএব মানুষ সর্বদাই তার সঠিক বা ভ্রান্ত আকিদার দ্বারা পরিচালিত। যখন তার আক্বীদা সঠিক হবে, তখন তার সব কিছুই ঠিক হয়ে যাবে। আর যখন তার আক্বীদা ভ্রষ্ট হবে তখন তার সব কিছুই ভ্রান্ত ও ভ্রষ্ট হবে। মানুষের মাঝে ন্যায়পরায়ণতা ও সমতা বিধানের ক্ষেত্রে দ্বীন হলো উত্তম রক্ষক। এজন্যই ইহা সমাজের জন্য আবশ্যক। একথা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলা যে, শরীরে ক্বলবের যেমন স্থান তেমনি সমাজে দ্বীনের স্থান।
দ্বীনের যখন এত গুরুত্ব , আবার দেখা যায় বিশ্বে নানা ধর্ম ও মতবাদ রয়েছে এবংপ্রত্যেক জাতিই তাদের ধর্ম নিয়ে সন্তুষ্ট আছে; তাহলে কোনটি সঠিক দ্বীন যা মানবাত্মার সব ধরণের প্রয়োজন মিটাতে পারে। আর সঠিক দ্বীনের শর্তাবলী ও নিয়মাবলীই বা কি?