পূর্বের কথামত রাশেদ তার দু’বন্ধুকে লুফোর যাদুঘরের (Louvre Museum) গেটেরসামনে অভ্যর্থনা জানালো। সে তাদেরকে যাদুঘরের ভিতরে ঘুরে দেখতে আহবান জানিয়ে বললঃ
আমি এই স্থান নির্ধারন করেছি, আজকের আলোচনা শুরু করার আগে তোমাদেরকে নিয়ে এ যাদুঘরে ঘোরার জন্য, যাতে মানব ইতিহাস সম্পর্কে কিছু জানতে পারি। আমার এ ভাবনার ব্যাপারে তোমাদের মতামত কি? তোমাদের ভাল না লাগলে এখান থেকে আমরা ফিরে যেতে পারি...
মাইকেলঃ রাশেদ তোমার ব্যাপারটা খুবই আশ্চর্যজনক... আমাদেরকে এখানে এনে আবার আমাদের মতামত চাও!! এখানে আসার আগেই এ ব্যাপারে পরামর্শ করা উচিত ছিল। তবে আমার কোন অসুবিধে নেই, রাজিব তোমার মতামত কি?
রাজিবঃ আমারও কোন অসুবিধে নেই, তবে আমি মনে করি আমাদের ঘুরাফেরা তাড়াতাড়ি সেরে ফেলতে হবে, যদি আমরা পূর্বনির্ধারিত আলোচনা করতে চাই। লুফোর যাদুঘর অনেক বড়, এতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন এবং আমাদের শক্তিও শেষ হয়ে যাবে।
রাশেদঃ আমার ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী, আমি তোমাদেরকে চমকে দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ব্যাপারটাতে আমি ভুল করে ফেলেছি।
মাইকেলঃ তোমাকে এতকিছু বলতে হবেনা, এখন চল তাড়াতাড়ি ঘুরে আসি; কেননা যাদুঘরের কক্ষগুলোর দীর্ঘতা প্রায় তের বর্গকিলোমিটার, আর তাতে প্রায় লক্ষাধিক জিনিস আছে।
রাশেদঃ আমি লুফোর যাদুঘর ঘুরতে আসিনি, কিন্তু আমি কিছু জীবন্ত তথ্য সংগ্রহ করতে এসেছি যে বিষয়ে আমরা আজকে আলোচনা করব। আমার মনে হয় আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে প্রাচীন সভ্যতার সংগ্রীহিত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের প্রতি, আর এগুলোর প্রায়ই নীচতলা ও প্রথম তলায় রয়েছে...
প্রায় দুই ঘন্টা পরে তিন বন্ধু যাদুঘর থেকে বের হল, ঘুরা-ফেরার কারনে তাদেরকে একটু ক্লান্ত মনে হচ্ছে।
রাশেদঃ আমরা একটু বিশ্রাম নিতে পারি ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানা সামনের হোটেল থেকে দুপুরের খাবার খেতে পারি।
যখন তারা সেদিকে যাচ্ছিল, রাশেদ নতুন করে কথা শুরু করলঃ
তোমরা কি লক্ষ্য করেছ, আমরা যে প্রাচীন সভ্যতার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো দেখলাম তার সাথে কোন না কোনভাবে ধর্মের সম্পর্ক রয়েছে? এটা কি ইহা প্রমাণ করেনা যে, ইতিহাসের যেকোন সময় ও স্থানে মানুষের জন্য ধর্ম ছিল?!
রাজিবঃ তুমি যা বলেছ তা নৃতত্ববিদদের কাছে সমর্থিত একটা বিষয়। তারা বলেছেন যে, মানব ইতিহাস ও সভ্যতা খুঁজে তারা এমন কিছু সভ্যতা পেয়েছেন যেখানে শিল্প-কারখানা ছিলনা, কোন কোন সভ্যতায় ঘর-বাড়ি বা বড় বড় ইমারাত ছিলনা, আবার কোন কোন সভ্যতায় বিজ্ঞান ও দর্শন ছিলনা। কিন্তু এমন কোন সভ্যতা পাওয়া যায়নি যেখানে ধর্মীয় উপাসনালয় ছিলনা।
মাইকেলঃ প্রকৃতপক্ষে, কোন জ্ঞানী লোকই বলবেনা যে দ্বীন একটি খারাপ জিনিস, বরং দ্বীন হলো মানবের অস্তিত্বের জন্য সভ্যতার মৌলিক উপাদান। কিন্তু সমস্যা হলো, প্রত্যেক ধর্মের লোকেরা মনে করেন যে, তার ধর্মই সঠিক, অন্যেরটা ভুল। সে তার ধর্মের দিকে লোকদেরকে ডাকে। প্রত্যেক আক্বিদার লোকেরা তাদের বিশ্বাসী বিষয়ের অনুসরণ করতে বলে ও তাদের নেতাদেরকে সম্মান করতে বলে। প্রত্যেক জাতি তার ধর্মকে সত্য মনে করেন, ফলে ব্যক্তি দিশেহারা হয়ে যায়ঃ সত্য ধর্ম কি ইহুদি ধর্ম? নাকি খৃষ্টান ধর্ম? নাকি বৌদ্ধ ধর্ম? নাকি ইসলাম ধর্ম? কিভাবে জানব কোনটি সত্য ধর্ম? নাকি আমরা বলব যে, সব গুলোই সঠিক, যেহেতুসবগুলোই তাদের ধর্মীয় প্রয়োজনীয়তা মেটায়?! বিষয়টি হয়রান হওয়ার মত, তাইনা?
রাশেদঃ হ্যাঁ, দিশেহারা হওয়ার মতই, কিন্তু একটু চিন্তা ভাবনা ও সূক্ষ্ম দৃষ্টি দিলেই এ দিশেহারা ও হয়রানি থেকে বের হওয়া যায়ঃ আমরা এখন ক্ষুধার্ত, তাই বলে আমাদের সে ক্ষুধা মেটানোর জন্য খাবারটি মানুষের জন্য উপযোগী নাকি পশুদের জন্য উপযোগী এগুলো বিবেচনা না করেই যা পাই তাই খাবনা। আমাদের ক্ষুধা নিবারণের জন্য যা পাই তাই দিয়ে উদরপূর্ন করতে রাজী হবনা। তাহলে আমাদের আত্মিক চাহিদা পূরণের ব্যাপারে আমাদেরকে কতটুকু গুরুত্ব দিতে হবে... অবশ্যই আমাদেরকে সঠিকটা যাচাই বাচাই করে নিতে হবে।
আবার সবগুলো সত্য হওয়াও অসম্ভব, কেননা সত্য একটি, একাধিক হতে পারেনা। এ সব ধর্মগুলো সব আল্লাহর পক্ষ থেকে হতে পারেনা, যে সব গুলো সত্য হবে। যখন ধর্ম একাধিক আর সত্য মাত্র একটি তাহলে একটি প্রশ্ন দাঁড়ায়ঃ কোন ধর্মটি সত্য? তাহলে আমাদেরকে বাতিল ধর্ম থেকে সত্য ধর্ম বের করতে হলে কতিপয় মৌলিক নীতিমালা জানতে হবে। যখন এগুলো কোন ধর্মের মধ্যে পাওয়া যাবে তখন সেটাকে সত্য ধর্ম বলা হবে। আর যখন এগুলো বা এসবের কোন একটপাওয়া যাবেনা তখন আমরা বুঝব যে এটা বাতিল ধর্ম।
রাজিবঃ কিন্তু তুমি তো এখন তোমার কথার মাঝেই প্রথম মূলনীতি বলে দিয়েছ। তা হলো, ধর্মটি হবে আল্লাহর পক্ষ থেকে, তাহলে ধর্ম কি আসমানী হওয়া জরুরী? পৃথিবীতে তো অনেক ধর্ম আছে যা আসমানী ধর্ম নয়, সেগুলো লক্ষ লক্ষ লোক অনুসরণ করে। যেমনঃ বৌদ্ধ, হিন্দু, কনফিউশিয়াসের ধর্ম ইত্যাদি।
রাশেদঃ এটা খুবই স্পষ্ট, যে কোন দ্বীনের মূল হলো এক ইলাহ বা একাধিক ইলাহের(!) উপাসনা করা। যখন আমরা স্বীকার করলাম যে, একজন রব-ই বিশ্ব ও মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন, তিনিই পৃথিবীর সব কিছু মানুষের অধীনস্থ করে দিয়েছেন, তাদেরকে অনেক নেয়ামত দান করেছেন, তাহলে এটাও অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পড়ে যে, ইবাদত পাওয়ার একমাত্র অধিকারী হলেন তিনিই, তাঁর কোন শরিক নেই। কিভাবে অন্যের শুকরিয়া ও ইবাদত করা হবে? অথচ তিনি সৃষ্টি করেছেন ও রিজিক দান করেন। এছাড়াও সত্য ধর্ম এক আল্লাহর ইবাদতের দিকে ডাকবে, তাঁর জন্য সত্য ইলাহের গুণাবলী সাব্যস্ত করবে, তাঁর রাসুলগণকে পরম শ্রদ্ধার চোখে দেখবে এবং তাদেরকে যথাযথ সম্মান করবে।
আমরা পূর্বের আলোচনায় একমত হয়েছিলাম যে, সত্য ইলাহের গুণাবলী ও মানুষের প্রয়োজনীয়তার দাবী হলো, মানুষকে পথপ্রদর্শন করার জন্য এবং তাদের সুশৃংখল জীবন ও সুখ শান্তির জন্য একটি জীবন বিধান থাকা। আর সে জীবন বিধান হবে একমাত্র সে ধর্মের আলোকে যা সৃষ্টিজগত সম্পর্কে সম্যক অবহিত স্রষ্টা কর্তৃক নির্বাচিত।
আমরা আরো একমত হয়েছিলাম যে, মানুষের হিসাব ও প্রতিদানের জন্য শেষদিন থাকা জরুরী, যেদিন সে তার কৃতকর্মের ফলাফল পাবে ও জুলুমের প্রতিদান ভোগ করবে। যখন একমাত্র আল্লাহ তায়া’লাই কিয়ামতের দিনে বান্দাহর হিসাব নিবেন, তাহলে তাঁর হিসাবটাও তাঁর প্রেরিত ধর্ম অনুযায়ী হতে হবে। এর উপর ভিত্তি করে আমরা বলতে পারি যে, যে কোন ধর্ম কোন ব্যক্তি প্রবর্তন করলে ও তা তার নিজের দিকে সম্পৃক্ত করলে সেটা দ্বিধাহীনভাবে বাতিল ধর্ম।
তবে আমি একটা কথা বলে রাখতে চাই; তা হলো, অনেক ধর্মের অনুসারীকে যদি জিজ্ঞেস কর তাদের বিশ্বাসের দলিলের ব্যাপারে তখন তারা জবাব দিবে যে, আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে এ ধর্মের উপর এবং এ পথে চলতে দেখেছি, অতঃপর তারা অনেক মিথ্যা কিচ্ছা কাহিনী ও ঘটনা বর্ণনা করবে। এজন্য তারা উত্তরাধিকারসুত্রে পাওয়া কিতাবের উপর নির্ভর করে, যেগুলো কে বলেছে বা কে লিখেছে কিছুই জানা নাই। প্রথম কোন ভাষায় লেখা হয়েছিল, কোন দেশে পাওয়া গেছে তাও জানা নাই। এগুলো শুধুমাত্র কিছু মিশ্রিত কথা, যা জমা করা হয়েছে, এরপর পালাক্রমে এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্ম প্রাপ্ত হয়েছে, কোন ধরণের বৈজ্ঞানিক গবেষণা ছাড়াই। এগুলো থেকে আমাদেরকে দূরে থাকতে হবে। এখান থেকে সত্য ধর্মের মূল বৈশিষ্ট্য স্পষ্ট হয়ে যায়, তা হলো,, এর নিসবত বা সম্পৃক্ততার মূল উৎস জ্ঞাত থাকা আর আল্লাহর পক্ষ থেকে রাসুলগনের মাধ্যমে প্রেরিত হয়েছে তা সঠিকভাবে প্রমাণিত হওয়া।
রাজিবঃ অসুবিধে নেই, তাহলে আমাদেরকে সেসব মূলনীতির উপর ভিত্তি করে চলতে হবে যেগুলোর ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি; চাই সেগুলো বিবেক, বিজ্ঞান ও প্রকৃতিগত স্বভাব দ্বারা দলীল-প্রমান নেয়ার ক্ষেত্রে হোক বা অন্যান্য প্রমানিত বাস্তবতা হোক যার ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি। যেমনঃ রবের অস্তিত্ব, সত্য রবের গুণাবলী, মানব জাতির জন্য রিসালাতের প্রয়োজনীয়তা।
মাইকেলঃ যখন আমরা এ ব্যাপারে একমত হলাম, তাহলে ধর্মটি আল্লাহর পক্ষ হতে হওয়া এবং একমাত্র তাঁর জন্যই ইবাদাত হওয়া-এসবের পরে যে গুণটি থাকতে হবে তা হলো, ধর্মটি জ্ঞান-বিজ্ঞানকে সম্মান করবে, এর বিরোধীতা করবেনা। সঠিক জ্ঞান বা বিবেকের সাথে একমত হতে হবে। কেননা আমরা যখন বলব যে, সঠিক ধর্ম আল্লাহর পক্ষ থেকে, আর সঠিক জ্ঞানও আল্লাহর সৃষ্টি, তাহলে আল্লাহর দ্বীন ও তাঁর সৃষ্টির মাঝে বিরোধ হতে পারেনা।
রাশেদঃ তোমার কথার সাথে একমত। সাথে সাথে আমি দু’টি বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি তা হলোঃ
প্রথমতঃ আমরা আগেই বলেছি, কোন কিছু সংঘটিত হওয়া বা সাব্যস্ত হওয়ার ব্যাপারটি বিবেকের কাছে নিশ্চিতভাবে অসম্ভব হওয়া আর কোন বস্তুর ধারণা বিবেকের কাছে কঠিন মনে হওয়া- এ দুটোর মাঝে অনেক তফাৎ আছে। দ্বীনের মধ্যে এমন কিছু জিনিস আছে যেগুলো কল্পনা করা বা তার অবস্থাসম্পর্কে সন্তোষজনক ধারণা করা বিবেকের পক্ষে কঠিন হয়ে যায়। যেমনঃ ফেরেশতা ও শয়তানের অস্তিত্ব, মানবের অন্তর্ভুক্ত রাসুলের নিকট অহি নাযিলের পদ্ধতি , কিয়ামতের দিনের বিস্তারিত বর্ণনা ইত্যাদি। কিন্তু এসবকিছু এমনসব বিষয় হতে ভিন্নতর যা সংঘটিত হওয়া বিবেকের কাছে নিশ্চিতভাবে অসম্ভব।
যেমনঃ একশত বছর আগে আকলের কাছে বিশ্বাস করা কষ্টকর ছিল যে, মানুষ উপরে উঠতে পারবে, এমনকি চাঁদে যান পাঠাতে পারবে, বা হাজার হাজার মাইল দূর থেকে অন্যের কথা শুনতে পারবে ও অন্যকে দেখতে পারবে। কিন্তু জ্ঞান এটাকে অসম্ভব মনে করেনি। কিন্তু যখন আমরা বলি একই ব্যক্তি একই সময় দুটি স্থানে, বা (১+১+১=১) তখন বিবেক এটাকে অসম্ভব বলে।
দ্বিতীয়তঃ পূর্বের পয়েন্ট অনুযায়ী, দ্বীনের কিছু কিছু ব্যাখ্যা আমাদের জ্ঞানের কাছে কখনো কখনো স্পষ্ট হয়ে উঠেনা, যদিও জ্ঞান সেটার বিরোধিতা করেনা। তখন সেগুলোকে মেনে নিতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা সঠিক দলিলের উপর ভিত্তি করে এগুলোর উপর ঈমান এনেছি। কেননা যখন তুমি জ্ঞানের দ্বারা বুঝতে পারবে যে, কোন ব্যক্তি ১০০% নির্ভরযোগ্য লোক, তাঁর বিশুদ্ধতার ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই, সে ব্যক্তিটি তাঁর উপর তোমার বিশ্বাসের ব্যাপারে পরীক্ষা করে যদি তোমাকে বলেঃ (এ সাদা কাগজে স্বাক্ষর কর) তখন তুমি এ কাগজের মূল উৎস কি সে ব্যাপারে জিজ্ঞাসা না করেই স্বাক্ষর করবে। আর যদি তাঁর উপর তোমার বিশ্বস্ততা পূর্ণ না থাকে তবে তুমি তাঁকে সে কাগজের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করবে। এমনিভাবে ঈমান ও বিশ্বাসের ব্যাপার। এটা জ্ঞান ও চিন্তার মাধ্যমে আল্লাহর উপর বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে হয়। দ্বীনের বিস্তারিত বিষয়সমূহ আল্লাহর উপর তোমার বিশ্বাসকে আরো শক্তিশালী ও মজবুত করব।
মাইকেলঃ তাহলে, সত্য ধর্মের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলোঃ এটা পরস্পর বিরোধপূর্ণ হতে পারবেনা, এক অংশের সাথে অন্য অংশ ভিন্ন হতে পারবেনা। তাই একবার এককাজের আদেশ দিয়ে, আবার সে কাজের বিপরীতটা করতে আদেশ দিবেনা, বা একটি জিনিস একবার হারাম করে অতঃপর আবার কোন কারণ ছাড়াই জায়েয করবেনা, বা কোন ব্যক্তি বা সম্প্রদায়ের জন্য কোন কিছু জায়েয করে অন্যের উপর তা হারাম করবেনা।
রাজিবঃ যখন আমরা বলব যে, মানব জাতির কাছে তাদের স্রষ্টা যা চান এ দ্বীন তাঁর জন্যদলিল স্বরূপ, তখন এটাও অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পড়ে যে, এ দ্বীন আল্লহর ইবাদতের দিকে পথ প্রদর্শক, আল্লাহর উদ্দেশ্য মানব জাতিকে বুঝানোর মাধ্যম, মানুষের জন্য অনুসরনীয় বিধি-বিধান, জীবনের সব ধরণের প্রশ্নের জবাব দিবে, ইহা বলে দিবে সে কোথা থেকে এসেছে? কোথায় যাবে? আত্মার প্রশান্তি, নিরাপত্তা কিভাবে আসবে? আর মানবের স্বভাবজাতের সাথে এর মিল থাকবে।
মাইকেলঃ আমি মনে করি গুরুত্বপূর্ন বিষয় হলো, সত্য ধর্ম মহান চরিত্র ও ভাল কাজের দিকে ডাকবে ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখবে। ইহা সৃষ্টির জন্য রহমত স্বরূপ হবে,যা তাদেরকে রক্ষা করবে নিজের উপর জুলুম ও পারস্পরিক জুলুম হতে; চাই সে জুলুম অন্যের অধিকার বিনষ্টের মাধ্যমে হোক বা কল্যানকর বিষয় জোর করে চাপিয়ে দেয়ার মাধ্যমে হোক অথবা বড়রা ছোটদেরকে গোমরাহ করার মাধ্যমে হোক।
রাশেদঃ আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত আছে যা আমরা ভুলে গেছি, সেটা হলোঃ দ্বীনের মধ্যে এসব ভাল গুণাবলীর সবগুলো থাকবে এর কোনটা বাদ যাবেনা।
মাইকেলঃ আমি চাই রাশেদ তুমি তোমার ধর্ম সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বল, আমি দেখেছি তোমার ধর্ম সম্পর্কে আমার ধারণা খুবই কম, বা যতটুকু জানি তা বিকৃত।
রাশেদঃ আগামী সাক্ষাতে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করব।