রাশেদ যখন যুব-আবাসের সামাজিক হলে প্রবেশ করল তখন মাইকেলকে একটি টেবিলের পাশে বসে হলের ছাদের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখতে পেল, যেন সে ঝুলন্ত ঝাড়বাতি নিয়ে চিন্তা করতে ছিল। রাশেদ তার দিকে এগিয়ে গিয়ে অভিবাদন করল। মাইকেল এটা খেয়াল করেনি, রাশেদ তার সামনে চেয়ার টেনে বসে বলতে লাগলঃ
মনে হচ্ছে তুমি কোন ব্যাপারে খুবই চিন্তিত.. আমার সাথে কি তোমার চিন্তার বিষয়টা শেয়ার বা আলোচনা করা যায়?
মাইকেলঃ ওহ! দুঃখিত, তোমার আগমন আমি লক্ষ্য করিনি...।
রাজিব এখনো আসেনি?
রাশেদঃ আমাদের নির্ধারিত সময়ের এখনো পাঁচ মিনিট বাকি আছে।
ঐ যে, সে আমাদের দিকে আসতেছে...
রাজিবঃ শুভ অভিবাদন, তোমাদের সাথে দেখা করার জন্য আমি অধীর আগ্রহে ছিলাম।
রাশেদঃ আমরাও ....
মাইকেলঃ প্রকৃতপক্ষে আমি এ ফলপ্রসু আলোচনায় খুবই খুশি... তোমাদের আগমনের পূর্বে আমি একটা বিষয়ে গভীরভাবে ভাবছিলাম, বিষয়টিতে তোমাদের অংশগ্রহণ করাকে আমি পছন্দ করি। আমাদের পূর্বের আলোচনাসমূহ থেকে আমার এ চিন্তা জন্মায়, যে প্রতিপালক আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তাকেই যখন আমাদের ইলাহ হিসেবে মানা উচিত, তাহলে এটা কি সম্ভব যে তিনি আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ না রেখে এবং তাঁকে চেনার কোন পথ না রেখে আমাদেরকে এমনিতেই ছেড়ে রেখেছেন?আমাদেরকে এমন অবস্থায় ছেড়ে রাখা কি যুক্তিযুক্ত?
রাজিবঃ তোমাদের এখানে আসার আগে আমিও একই বিষয় নিজে নিজে চিন্তা করেছি।
রাশেদঃ তোমাদের চিন্তা ভাবনাগুলো খুবই ভাল ও যথাযথ। আল্লাহ তায়া’লা মানুষকে উত্তম আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন, জমিনে যা কিছু আছে তার সব কিছুই মানুষের অধীনস্থ করে দিয়েছেন, আসমান থেকে তিনি অনেক কল্যাণ বর্ষণ করেন, যদিও তারা সকলে এগুলো পাওয়ার যোগ্য নয়। এই মহাবিশ্ব ও মানুষ সৃষ্টি এবং তাদের জন্য সব ধরণের নেয়ামতের ব্যবস্থা অনর্থক বা লক্ষ্য-উদ্দেশ্যহীন হওয়া যৌক্তিকভাবে অসম্ভব।
মাইকেলঃ খুবই সুন্দর, তাহলে আমরা এ পয়েন্ট নিয়েই আলোচনা চালিয়ে যাব।তাহলে, মহাবিশ্ব ও মানব সৃষ্টি এবং তাদের জন্য সব ধরণের নেয়ামতের ব্যবস্থা করার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কি?
রাজিবঃ আমার মনে হয় ইতিপূর্বে আমরা সত্য ইলাহের গুণাবলীর যে আলোচনা করেছিলাম তার সাথে এর সম্পর্ক আছে, কেননা রব বা প্রতিপালক এই সৃষ্টির পূর্বেই ছিলেন, কিন্তু আমরা সে সময়টা নির্ধারিত করতে পারিনা।
রাশেদঃ রাজিব তুমি যা বলেছ তা ঠিকই। আমি একটা উদাহরণ দিয়ে বোঝাতে চেষ্টা করব। উদাহরনটি পুরোপুরি না মিললেও তার কাছাকাছি হবে। যখন তুমি কোন কিছু পছন্দ কর, তখন তার বাস্তবায়ন পছন্দ কর, তাই না?
রাজিবঃ অবশ্যই।
রাশেদঃ তাহলে বাস্তবায়ন করতে কে বাঁধা দেয়?
রাজিবঃ আমার যা মনে হচ্ছে, আমি এটা বাস্তবায়ন করতে পারিনা বলে।
রাশেদঃ তাহলে, যখন তোমার মাঝে সে শক্তির সঞ্চয় হবে, তখন তুমি তা বাস্তবায়ন করতে পারবে... বিষয়টা এমনই।
মাইকেলঃ আমার কাছে বিষয়টা স্পষ্ট না হয়ে আরো অস্পষ্টতা বেড়ে গেল।
রাশেদঃ ঠিক আছে, আমি কথা পূর্ণ করছি... আমরা পূর্বের আলোচনায় একমত হয়েছিলাম যে, আল্লাহ পাকের অনেক সুন্দর সুন্দর গুণাবলী আছে, এ গুণাবলীগুলো সর্বোত্তম ও সর্বোন্নত গুণাবলী, যা আল্লাহ ও মাখলুক সকলেই ভালবাসে। আল্লাহর সে সব গুণের মাঝে হলোঃ তিনি সৃষ্টিকারী, শক্তিশালী, সক্ষম, মালিক ইত্যাদি। এ সব গুণের ভালবাসার অর্থ হচ্ছে এ কাজ গুলো করা ও বাস্তবায়ন করা। যেহেতু আল্লাহ তায়া’লা সক্ষম ও শক্তিশালী তাই তাঁর ইচ্ছ বাস্তবায়নে কোন কিছুই তাঁকে বাঁধা দিতে পারেনা, তাই আল্লাহ তায়া’লা সৃষ্ট জগতকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর প্রিয় গুণের নিদর্শন হিসাবে। যেহেতু তিনি খালিক বা সৃষ্টিকর্তা তাই সৃষ্টি করাকে ভালবাসেন, যেহেতু তিনি দাতা, তাই তিনি দান করাকে ভালবাসেন। আবার যেহেতু তিনি রহিম বা দয়ালু, তাই তিনি দয়া করাকে ভালবাসেন। তিনি যেহেতু সর্বময় সক্ষম, তাই কোন কিছুই তাঁকে তাঁর ইচ্ছানুযায়ী কোন কাজ করতে বাঁধা দেয়না।
মাইকেল; তাহলে এসব সমীকরণের ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান কি হবে? !
রাশেদঃ আমাদের অবস্থান হলো, এই যে, আল্লাহ আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তাঁকে চেনা ও জানার জন্য, এবং তাঁকে সব ধরণের অপূর্ণতা ও দোষ থেকে মুক্ত হিসেবে স্বীকার করার জন্য।আমাদেরকে অনেক নেয়ামত দান করেছেন, এগুলোকে শুধু ভোগের জন্য দান করেন নি, বরং তাঁর শুকরিয়া আদায় করা ও এগুলোর অপব্যবহার না করার জন্য দিয়েছেন। আর এসবের দাবী হলো, একমাত্র তাঁর ইবাদতের স্বীকৃতি দেয়া, কেননা তিনিই একমাত্র দাতা, সৃষ্টিকর্তা, তিনিই ইবাদতের একমাত্র যোগ্য ও উপযুক্ত।
রাজিবঃ তোমার কথায় দুটি প্রশ্নের উদ্রেক হয়। প্রথমটা হলোঃ তুমি যা বলেছ সেগুলো বাস্তবায়নে কি তাহলে আমরা উপাসনালয়য় বসবাস করব?
রাশেদঃ না, না। তুমি যা মনে করেছ আমি কিন্তু তা উদ্দেশ্য করিনি। ইবাদতের এ অর্থ অসম্পুর্ণ, যা আমার ধর্ম ইসলাম স্বীকার করেনা, ইবাদতের অর্থমানব জীবনের সব ধরণের কার্যক্রমকে শামিল করে, যেখানে জমিনের আবাদ, মানব সভ্যতা গঠন ইত্যাদি রয়েছে।
মাইকেলঃ কিন্তু আমরা দ্বীনের দিকে না গিয়ে জমিন আবাদ করি, বর্তমান সমাজ সভ্যতা গঠন করি ।
রাশেদঃ এ কারনেই আমরা এ সভ্যতায় মানুষের অনেক দুর্ভোগ দেখতে পাই। যেমন দুশ্চিন্তা, আত্যহত্যা, সমকামিতা, সামাজিক অবক্ষয় ও মানুষের একের উপরে অপরের অত্যাচার। বিশেষ করে এগুলোর কারণ হচ্ছে মানুষ নিজেদের কার্যক্রমকে কারো নজরদারী হতে নিরাপদ মনে করার কারণে। আর এগুলো সেসব নীতিমালার অনেকটা কাছাকাছি হয়ে থাকে যাতে শুধু বস্তু এবং তার আবিষ্কার ও উন্নতিতে গুরুত্ব দেয়া হয়। অথচ মানবিক দিক সেখানে অনুপস্থিত। এই দিকটাকে গুরুত্ব দিলে মানবিক বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখা আবশ্যক হয়ে পড়ে। আর তার মধ্যে অন্যতম হলো আত্মিক দিক।যখন সভ্যতা ওমানুষের কাজকর্ম তাঁর স্রষ্টার সাথে সম্পৃক্ত হবে, তখন তার সব দিক মানবিকতার সাথে সংগতিপূর্ণ হবে, বরং সমগ্র মানবজাতি ও মহাবিশ্বের সাথে সংগতিপূর্ণ হবে। কেননা এটা সহজভাবেই বলা যায় যে, যিনি এ মানব ও বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন তিনিই তাদের কল্যাণ- অকল্যাণ, ভাল-মন্দ সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত।
মাইকেলঃ এর অর্থ তাহলে কি এটাই দাঁড়ায় যে, যেমনঃ ইঞ্জিনিয়ার রাজিব যদি কোন কাজ সুচারূরুপে করতে চায় তাহলে তাকে ধর্মের কিতাবের দিকে যেতে হবে?..... এটা কিভাবে সম্ভব?! অতঃপর যদিও তোমার কথা মেনে নেয়া হয় তাহলে কিভাবে আমরা আমাদের জীবনকে সরল সঠিক পথে পরিচালনা করতে আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী চলব?
রাশেদঃ আমার কথার অর্থ এটা নয় যে, দ্বীন বিজ্ঞান-প্রযুক্তি এবং জাগতিক কার্যকলাপ ইত্যাদি বিষয়ে অনুপ্রবেশ করবে বা নাক গলাবে। বরং জীবন যাপনের জন্য দ্বীন কিছু মৌলিক নিয়ম-কানুনও নৈতিক মূল্যবোধ নির্ধারন করে দিয়েছে, যা মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক ও সামাজিক সম্পর্ককে নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও এর মাধ্যমে সে এ বিশ্বে তার অবস্থান ও মর্যাদা এবং তার রবের সাথে তার সম্পর্ক জানতে পারে।
আরো স্পষ্ট করতে তোমাদের জন্য দু’টি উদাহরণ দিচ্ছিঃ আল্লাহ তায়া’লা আমাদেরকে এবং জমিন ও এতে যা কিছু আছে সবই সৃষ্টি করেছেন, আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষন করে জমিন থেকে খাদ্য উৎপাদন করেন। অতঃপর তিনি উহা থেকে ঔষধ ও বিষাক্ত বিষ উৎপাদন করেন। আর আমাদের জ্ঞানে ক্ষমতা দিয়েছেন অখাদ্য থেকে খাদ্যকে বেছে নেয়ার, আমাদের আরো ক্ষমতা দান করেছেন এ সব উদ্ভিদ থেকে উপকৃত হওয়ার এবং পরীক্ষানিরীক্ষা ও গবেষণা করে ঔষধ তৈরি করার। এর পর তিনি তাঁর দ্বীনে আইন করে দিয়েছেনঃ যা কিছু আমাদের বা অন্যদেরকে ক্ষতি করে তা নিষিদ্ধ, ইহা থেকে বিরত থাকতে হবে।
অন্য আরেকটি উদাহরনঃ ন্যায়বিচার ভাল, আর অন্যায় অত্যাচার খারাপ এ ব্যাপারে সব মানুষই ঐক্যমত। কিন্তু যখন এ ন্যায়বিচারের বিস্তারিত ব্যাখ্যায় যায় তখন দেখবে এটা নিয়ে অনেক মতানৈক্য দেখা দিবে। কেননা মানুষের জ্ঞান লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বুঝতে বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। এছাড়াও প্রত্যেক দল তাদের স্বার্থ দেখে। এ জন্যই আমাদের ন্যায়বিচারের একটা মূল উৎসের প্রয়োজন যা সব মানুষের সব ধরণের ক্ষমতার শীর্ষে থাকবে এবং সব মানুষ তার সামনে সমান হবে, তার অধিকারের ব্যাপারে কোন লৌকিকতা, ঝোঁক, প্রবৃত্তির অনুসরণএবং কোন ব্যাক্তিস্বার্থ থাকবেনা।
আর আল্লাহ যা চান তা জানার পথ হলোঃ এসবও আল্লাহর গুণাবলীর সাথে সম্পৃক্ত। তিনি মালিক ও প্রজ্ঞাময়। আমরা পূর্বের আলোচনায় বলেছিলাম যে, আল্লাহ তায়া’লা এ মহাবিশ্বকে বিশেষ হেকমতের কারণে সৃষ্টি করেছেন, অনর্থক সৃষ্টি করেন নি। তাহলে তোমরা কি এটা কে প্রজ্ঞা ভাবতে পার যে, যেমনঃ কোন কোম্পানি তার প্রয়োজনীয় সম্পত্তির ব্যাবস্থা করবে, সেখানে উৎপাদন হবে, শ্রমিক ও কর্মজীবিরা চাকুরি করবে, তার যন্ত্রগুলো সচল থাকবে, উৎপাদিত জিনিস বাজারজাত করা হবে...... আর এসব কিছু কোন নিয়ম-কানুন, অফিস ও আইন ছাড়া সম্ভব হবে!!!
মাইকেলঃ অবশ্যই না।
রাশেদঃ তাহলে এই মহাবিশ্ব ও সৃষ্টির ব্যাপারে তোমরা কি মনে কর...এজন্যই আল্লাহ তায়া’লা তাঁর কিতাব ও সনদ প্রেরণ করেছেন, যাতে মানবজাতির দ্বীন ও দুনিয়ার কল্যানের পথ দেখায়। এগুলো আবার তিনি তাঁর নির্বাচিত প্রতিনিধি যাদেরকে নবী ও রাসুল বলা হয় তাদের মাধ্যমে পাঠিয়েছেন। তাঁরা আল্লাহর আদেশ ও নিষেধের ব্যাপারে আল্লাহ ও বান্দার মাঝে মাধ্যম, যাতে বান্দা তাদের রব বা প্রতিপালককে চিনতে পারেন। তাহারা মানুষকে ন্যায়ের আলামত দেখিয়েছে, অন্যায়ের ক্ষতিকর দিক বর্ণনা করেছেন, মানুষকে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ অকল্যাণের সব কিছু বর্ণনা করেছেন।
মানুষ রিসালাত বা নবুয়্যাতের প্রতি খুবই মুখাপেক্ষী, কেননা সে দু’টো অবস্থানেঃ একটি অবস্থান তাঁকে ভাল কাজের দিকে টানে, আর অন্যটি তাকে ক্ষতিকর জিনিসের দিকে নিয়ে যায়, রিসালাত হলো আলোকবর্তীকা স্বরূপ যা কোনটা ভাল আর কোনটা মন্দ বলে দেয়। পৃথিবীতে বান্দার জন্য ইহা আল্লাহর পক্ষ থেকে আলোর দিশা ।
ভাল মন্দের মাঝে ইন্দ্রিয় পার্থক্য করা রিসালার উদ্দেশ্য নয়, কেননা এগুলো জ্ঞানহীন পশুপাখিরাও পারে। যেমন গাধা যব ও মাটির মাঝে পার্থক্য করতে পারে। বরং রিসালার উদ্দেশ্য হলো দুনিয়া ও আখেরাতে যে সব কাজ ব্যক্তির উপকার বা ক্ষতি করবে তার মাঝে পার্থক্য করা। যদি রিসালা না থাকত তবে বিবেক জীবনযাপনে ভাল মন্দ বিস্তারিতভাবে জানতে পারতনা।
রাজিবঃ দ্বিতীয় পয়েন্ট হলোঃ আমরা দেখি মানুষ আল্লাহ ও তাঁকে অবনত মাথায় মেনে নেয়ার ব্যাপারে বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে, তাহলে তাঁর নেয়ামত ভোগের ব্যাপারে কিভাবে সবাই সমান হবে?!
রাশেদঃ এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা, যাতে রবের ব্যাপারে তাদের অবস্থান প্রকাশ পায়। তবে তারা প্রতিদান ও শেষ পরিনতিতে একরকম হবেনা। এ প্রতিদানই সকল রাসুলের রিসালাতের মূল বিষয়, যা এমন আইন ও সনদ,যার দিকে সকলের ফেরা উচিত।
মাইকেলঃ আমি একটা বিষয় যোগ করব, সেটা হলোঃ সব মানুষ কিভাবে আল্লাহর নিয়ামত ভোগ করে, অথচ তাদের মাঝে কেউ কেউ ধোঁকাবাজ, মিথ্যাবাদী ও অত্যাচারী। আবার তাদের কেহ কেহ সামাজিক শাস্তি থেকে অব্যহতি পেয়ে যায়, আইন তাদের উপর প্রয়োগ হয়না?!!
রাশেদঃ এটাও মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য, কিন্তু এ সব লোক যখন সামাজিক শাস্তি থেকে অব্যহতি পায়, আইন তাদের উপর প্রয়োগ হয়না, তারা আল্লাহর সুবিচার ও ন্যায়পরায়নতা থেকে অব্যহতি পাবেনা। এটাই হলো মৃত্যুর পর কিয়ামতের দিনে পুনরূত্থান ও হিসাব নিকাশের হিকমত। অর্থাৎ প্রতিদানের দিন, মানুষ আল্লাহর ব্যাপারে এবং নিজ ও অন্যের সাথে যেসব ভাল-মন্দ কাজ করেছে তার প্রতিদান সেদিন পাবে। সেদিন সব পক্ষ- প্রতিপক্ষের মাঝে ন্যায় বিচার করা হবে।
কিন্তু এগুলো বুঝতে একটি রেফারেন্স বা মূলভিত্তির প্রয়োজন হয়, যাতে মানুষ নিজেদের মাঝে সে অনুযায়ী বিচার বিবেচনা করতে পারে এবং সেটা তাদের জানা থাকবে, তাকে উৎস হিসেবে গ্রহণ করবে। এখানেই নবী রাসুলের রিসালাতের ভূমিকা স্পষ্ট হয়। নবী-রাসুলেরা মানবজাতিকে সেসব মৌলিক বিষয় শিক্ষা দেন যে ব্যাপারে তাদের হিসাব নেয়া হবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করা বা তার ব্যাতিক্রম করার জন্য তাদের কি পরিনাম হবে তা তাদেরকে জানিয়ে দেন। তাদেরকে পরকালের সুখ-শান্তি ও আযাবের কথা, এবং কিয়ামতের দিন কি হবে, তা জানিয়ে দেন।
রাজিবঃ রাশেদ! তোমার কি মনে আছে যে, আমরা বলেছিলাম সত্য দ্বীনের কি কি গুণাবলী থাকে সে ব্যাপারে আলোচনা করব?
রাশেদঃ হ্যাঁ, ঠিক আছে, আমার মনে আছে।
রাজিবঃ আমার মনে হয় এ ব্যাপারে আলোচনা শুরু করা যায়।
মাইকেলঃ রাজিব, তোমার কথাই ঠিক, আমার মনে হয় আমাদের পরবর্তীআলোচনার বিষয় এটা হতে পারে।